বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতির নাম কি ?

বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতির নাম কি ? বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ২০২৩ সালের নির্বাচন রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ তারিখে নির্ধারিত ছিল। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, যিনি সংবিধানের বিধান অনুযায়ী মনোনয়ন দিয়েছিলেন, তিনিই একমাত্র প্রার্থী ছিলেন। এভাবে, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ তারিখে সাহাবুদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩-এ পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যেহেতু জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন রয়েছে এবং সংবিধানে ক্রস ভোটিং-এর বিধিনিষেধ রয়েছে, তাই দল কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কথা। এছাড়া বিরোধী দলগুলো আগেই ঘোষণা করেছিল যে তারা কোনো প্রার্থী দেবে না। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।

আরও পড়ুনঃ আধুনিক ইতিহাসের জনক কে

বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতির নাম কি

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাজ কি?

প্রধান দায়িত্ব:

  • রাষ্ট্রপ্রধান: রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত, দেশের একাত্মতা ও ঐক্যের প্রতীক।
  • নির্বাহী বিভাগের প্রধান: প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা নিয়োগ করেন।
  • আইন বিভাগের প্রধান: জাতীয় সংসদের অধিবেশন উদ্বোধন করেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন, আইন বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন।
  • বিচার বিভাগের প্রধান: প্রধান বিচারপতি ও সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের নিয়োগ করেন।
  • সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক: সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার।
  • আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি: বিদেশ রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও রক্ষা করেন।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ:

  • জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও তা প্রত্যাহার করতে পারেন।
  • আইন বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন।
  • দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ডাদেশ স্থগিত, হ্রাস বা মুক্তি দিতে পারেন।
  • নির্বাচন কমিশনের সদস্য নিয়োগ করেন।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেন।
  • জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেন।
  • রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কূটনৈতিক কর্মকর্তা নিয়োগ করেন।

সীমাবদ্ধতা:

  • রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছামত কাজ করতে পারেন না, সংবিধান ও আইনের আওতায় কাজ করতে হবে।
  • নির্বাহী বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
  • বিচার বিভাগের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করতে পারেন না।

রাষ্ট্রপতির মেয়াদ:

  • পাঁচ বছর, একবার নবায়নযোগ্য।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন:

  • জাতীয় সংসদের সদস্য ও সংসদের বাইরে থেকে সমান সংখ্যক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত নির্বাচন কলেজের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি:

  • মোহাম্মদ আবদুল হামিদ (২০২১ সালের ২৪শে জানুয়ারী দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত)

বাংলাদেশে, “সর্বাধিনায়ক” পদটি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহৃত হয় না।

আরও পড়ুনঃ হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তিনি একজন বেসামরিক ব্যক্তি যিনি প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ-এর মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ তত্ত্বাবধান করেন।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রধান হলেন সচিব। তিনি একজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা যিনি সকল বাহিনীর (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী) প্রতিনিধিত্ব করেন। সচিব প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সাথে সশস্ত্র বাহিনীর নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে কাজ করেন।

বাহিনী প্রধানগণ

প্রতিটি বাহিনী (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী) একজন প্রধান দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রধানগণ তাদের নিজ নিজ বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা এবং সচিবের কাছে রিপোর্ট করেন।

সামরিক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

  • মুক্তিযুদ্ধের সময়: মুক্তিযুদ্ধের সময়, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী
  • স্বাধীনতার পর: স্বাধীনতার পর, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কের পদभार গ্রহণ করেছিলেন।
  • ১৯৭৫ সালের পর: ১৯৭৫ সালের পর থেকে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে নাগরিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

উৎস:

আইন বিভাগ: সংজ্ঞা ও কার্যক্রম

আইন বিভাগ হলো সরকারের একটি শাখা যা আইন প্রণয়ন, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের জন্য দায়ী। এটি সাধারণত বিচার বিভাগ, আইন প্রণয়নকারী সংস্থা (যেমন, সংসদ) এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (যেমন, পুলিশ) নিয়ে গঠিত।

কার্যক্রম:

আইন বিভাগের প্রধান কার্যক্রমগুলি হল:

  • আইন প্রণয়ন: আইন বিভাগ নতুন আইন প্রণয়ন করে এবং বিদ্যমান আইন সংশোধন করে।
  • আইন ব্যাখ্যা: আইন বিভাগ আদালতের মাধ্যমে আইন ব্যাখ্যা করে।
  • আইন প্রয়োগ: আইন বিভাগ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে আইন প্রয়োগ করার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
  • বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধান: আইন বিভাগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।
  • আইনি শিক্ষা ও গবেষণা: আইন বিভাগ আইনি শিক্ষা ও গবেষণা প্রদান করে।
  • আন্তর্জাতিক আইন: আইন বিভাগ দেশকে আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রাখতে সহায়তা করে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে:

বাংলাদেশে, আইন বিভাগের প্রধান অংশগুলি হল:

  • বিচার বিভাগ: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত হলো সর্বোচ্চ আদালত। এর অধীনে আপিল আদালত, জেলা আদালত ও মাজিষ্ট্রেট আদালত রয়েছে।
  • জাতীয় সংসদ: জাতীয় সংসদ হলো বাংলাদেশের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা।
  • আইন মন্ত্রণালয়: আইন মন্ত্রণালয় হলো সরকারের একটি মন্ত্রণালয় যা আইন বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য দায়ী।
  • অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস: অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারের প্রধান আইনি উপদেষ্টা।

গুরুত্ব:

আইন বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি শাখা কারণ এটি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করে। আইনের শাসন মানে আইন সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য এবং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন বিভাগ নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করে এবং তাদেরকে অন্যায় থেকে রক্ষা করে।

জাতীয় সংসদ এর কাজ কি?

জাতীয় সংসদ হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের এককক্ষ বিশিষ্ট সর্বোচ্চ আইনসভা। এটি দেশের আইন প্রণয়ন, সরকারের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দায়ী।

জাতীয় সংসদের প্রধান কার্যক্রমগুলি হল:

  • আইন প্রণয়ন: জাতীয় সংসদ নতুন আইন প্রণয়ন করে এবং বিদ্যমান আইন সংশোধন করে।
  • সরকারের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান: জাতীয় সংসদ সরকারের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এবং প্রয়োজনে সমালোচনা করে।
  • রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: জাতীয় সংসদের সদস্যরা নির্বাচন কলেজ গঠন করে যা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করে।

জাতীয় সংসদের সদস্যদের সংখ্যা:

জাতীয় সংসদে মোট ৩০০ জন সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ২৯৯ জন সরাসরি নির্বাচনে নির্বাচিত হন এবং একজন মহিলা সদস্যকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করেন।

জাতীয় সংসদের মেয়াদ:

জাতীয় সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর।

বর্তমান জাতীয় সংসদ:

দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২৩ সালের ৩০শে ডিসেম্বর। বর্তমান সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

উৎস:

জাতীয় মুক্তিবাহিনী: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়করা

জাতীয় মুক্তিবাহিনী, যা মুক্তিবাহিনী নামেও পরিচিত, ছিল ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বাঙালি সেনা, ছাত্র, বেসামরিক ব্যক্তি এবং সকলের সমন্বয়ে গঠিত একটি সশস্ত্র বাহিনী। তাদের অদম্য সাহস, বীরত্ব ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে তারা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মুক্তিবাহিনীর গঠন:

  • ২৫ মার্চ: পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদে ২৫ মার্চ ঢাকায় ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভ শুরু হয়।
  • ৭ এপ্রিল: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ এপ্রিল ঘোষণাপত্রে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন।
  • এপ্রিল-মে: এপ্রিল ও মে মাসে, প্রশিক্ষিত সেনাসদস্য, ছাত্র-যুববাহিনী এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিবাহিনীর সার্বিক নেতৃত্বে আসেন।
  • জুন: জুন মাসে, মুক্তিবাহিনী ভারতের সহায়তা লাভ করে এবং যুদ্ধ আরও সংগঠিত ও কৌশলগতভাবে পরিচালিত হতে শুরু করে।

মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা:

  • গেরিলা যুদ্ধ: মুক্তিযোদ্ধারা সারা দেশে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে। তারা পাকিস্তানি সেনাদের উপর হামলা চালায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত করে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা দখল করে।
  • সামরিক অভিযান: মুক্তিবাহিনী বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সামরিক অভিযান পরিচালনা করে, যার মধ্যে রয়েছে জয়ন্তীপুর, কমলাপুর, এবং আশুগঞ্জ অভিযান।
  • জনমত গঠন: মুক্তিবাহিনী স্থানীয় জনগণের সমর্থন অর্জন করে এবং তাদের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করে।
  • সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ: মুক্তিযোদ্ধারা গান, কবিতা, নাটক এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক মাধ্যমের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শেষকথা

মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব:

  • জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী: তিনি ছিলেন মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন মূল নায়ক।
  • জাতীয় চার নেতা: এ.কে.এম. নজরুল ইসলাম, এম.এ.এস. করীম, এ.এম. হাওলাদার এবং আবুল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *