ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয় | জানলে অবাক হবেন

ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয়, ৪ থেকে ১০ দিন পর জ্বর হতে পারে। তবে, সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে জ্বর দেখা দেয়।

কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে, মশা কামড়ানোর ১২ দিন পর্যন্ত জ্বর নাও আসতে পারে।

জ্বর আসার আগে কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন:

  • মাথাব্যথা
  • শরীর ব্যথা
  • পেশী ব্যথা
  • ক্লান্তি
  • ভেঙে পড়ার মতো অনুভূতি
  • খাবারে অরুচি
  • বমি বমি ভাব
  • বমি
  • ডায়রিয়া

জ্বর সাধারণত উচ্চ (১০১°F – ১০৪°F) থাকে এবং ৩ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়।

জ্বর ছাড়াও ডেঙ্গুর অন্যান্য লক্ষণ হল:

  • ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি
  • মুখ ও গলায় ঘা
  • নাক দিয়ে রক্তপাত
  • গুরুতর ক্ষেত্রে, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম (DSS) হতে পারে, যা প্রাণঘাতক হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয় এবং চিকিৎসা জন্য ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ।

ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচতে হলে মশার কাটায় থেকে সাবধান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হল:

  • মশার ডিম জমতে না দেওয়া
  • মশার লালার প্রজনন স্থান নিয়ন্ত্রণ করা
  • মশা নাশক ব্যবহার করা
  • মশার কাটায় থেকে শরীর ঢেকে রাখা
আরও পড়ুনঃ বার বার জ্বর আসার কারণ

ডেঙ্গু জ্বর কত দিন পর ভালো হয়?

ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন পর ভালো হতে শুরু করে। তবে, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে। জ্বর সাধারণত প্রথমে কমতে শুরু করে এবং তারপর অন্যান্য লক্ষণগুলো ও হালকা হতে থাকে। কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে সুস্থ হতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে, বিশেষ করে যদি তাদের জটিলতা হয়

ডেঙ্গু জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ হতে কিছু বিষয় মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ:

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। ডিহাইড্রেশন এড়াতে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
  • হালকা খাবার খান এবং ক্যাফেইন এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
  • জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন খান।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে ওষুধ খান।
  • জটিলতা হলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

মনে রাখবেন, ডেঙ্গু জ্বর একটি গুরুতর অসুস্থতা এবং সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। যদি আপনার ডেঙ্গু জ্বর হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

 

ডেঙ্গু মশা কখন কামড় দেয়

ডেঙ্গু মশা কখন কামড় দেয়?

ডেঙ্গু মশা, যাদের Aedes aegypti এবং Aedes albopictus নামেও পরিচিত, দিনের বেলায় কামড়ায়। সাধারণত সকালে এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের আগে তারা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে তারা রাতে ও কামড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি ঘর আলোকিত থাকে। ডেঙ্গু মশা আপনার শরীরের উষ্ণতা, কার্বন ডাই অক্সাইড, ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং পসিনার গন্ধের দ্বারা আকৃষ্ট হয়।

ডেঙ্গু মশা থেকে বাঁচতে আপনার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত:

  • মশা নাশক ব্যবহার করা
  • মশার কাটায় থেকে শরীর ঢেকে রাখা
  • ঘর পরিষ্কার রাখা
  • দরজা ও জানালায় নেট লাগানো

ডেঙ্গু মশা কামড়ালে কি কি লক্ষণ দেখা দেয়?

ডেঙ্গু মশা কামড়ালে সাধারণত কোন লক্ষণ দেখা দেয় না। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকেরা জানতে পারে না যে তারা কখন মশার কামড় খেয়েছে। তবে, কিছু লোকের ক্ষেত্রে মশা কাটার কয়েক দিন পর কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • জ্বর: উচ্চ জ্বর (১০১°F – ১০৪°F) সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের একটি প্রধান লক্ষণ
  • মাথাব্যথা: তীব্র মাথাব্যথা ডেঙ্গু জ্বরের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ
  • শরীর ব্যথা: পেশী ও জয়েন্টে ব্যথা এবং বেদনা
  • ক্লান্তি: অস্বাভাবিক ভাবে ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
  • খাবারে অরুচি: খাবারের প্রতি আগ্রহ হ্রাস পাওয়া
  • বমি বমি ভাব: বমি বমি ভাব এবং কিছু ক্ষেত্রে বমি
  • ডায়রিয়া: পাতলা মল এবং বারবার ডায়রিয়া
  • ত্বকে ফুসকুড়ি: লালচে ফুসকুড়ি শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিতে পারে

মনে রাখবেন, এই সব লক্ষণ অন্যান্য অসুস্থতার ও হতে পারেডেঙ্গু জ্বর নির্ণয় এবং চিকিৎসা জন্য ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ

ডেঙ্গু মশা চেনার উপায়

ডেঙ্গু মশা, যাদের Aedes aegypti এবং Aedes albopictus নামেও পরিচিত, অন্যান্য মশার চেয়ে আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।

চেহারা বৈশিষ্ট্য:

  • ছোট: ডেঙ্গু মশা অন্যান্য মশার তুলনায় ছোট হয়, প্রায় 5-8 মিমি লম্বা।
  • কালো এবং সাদা: ডেঙ্গু মশার শরীরে কালো এবং সাদা ডোরাকাটা নকশা থাকে।
  • পা: ডেঙ্গু মশার পায়ে সাদা রঙের আংশ থাকে।
  • শুঁড়: ডেঙ্গু মশার শুঁড় লম্বা এবং সরু হয়।

আচরণ:

  • দিনের বেলায় সক্রিয়: ডেঙ্গু মশা সাধারণত সকাল এবং বিকেলে সক্রিয় থাকে, বিশেষ করে সূর্যাস্তের আগে।
  • মানুষের কাছাকাছি থাকে: ডেঙ্গু মশা মানুষের বসবাসের এলাকায় বাস করে এবং মানুষের রক্ত খেতে পছন্দ করে।
  • শান্ত: ডেঙ্গু মশা উড়ার সময় অন্যান্য মশার তুলনায় কম শব্দ করে।

ডেঙ্গু মশা চেনার জন্য আরও কিছু টিপস:

  • মশার ডিম পরীক্ষা করুন: ডেঙ্গু মশা সাধারণত পরিষ্কার পানির পাত্রে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো কালো এবং ছোট হয় এবং একসাথে জড়ো হয়ে থাকে।
  • মশার লালার জন্য সম্ভাব্য স্থান পরীক্ষা করুন: ডেঙ্গু মশা টায়ার, ফুলের পাত্র, খেলনার গাড়ি, এবং পানি জমে থাকা অন্যান্য জিনিসপত্রে ডিম পাড়তে পারে।
আরও পড়ুনঃ লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
মশা কত ধরনের

মশা কত ধরনের?

আফ্রিকান মশা বিভিন্ন আকার এবং আকারে আসে, তবে তাদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সেগুলি অন্যান্য মশার প্রজাতি থেকে আলাদা করে।

  • আকার: আফ্রিকান মশা সাধারণত ছোট থেকে মাঝারি আকারের হয়, 3 থেকে 8 মিমি দৈর্ঘ্যে থাকে।
  • রঙ: আফ্রিকান মশার রঙ বাদামী থেকে কালো পর্যন্ত হতে পারে, কিছু প্রজাতিতে সাদা বা হলুদ চিহ্ন থাকে।
  • পা: আফ্রিকান মশার পাগুলিতে কালো এবং সাদা ব্যান্ড থাকে।
  • শুঁড়: আফ্রিকান মশার শুঁড় লম্বা এবং সরু হয়।

আফ্রিকান মশার কিছু সাধারণ প্রজাতির মধ্যে রয়েছে:

  • এডিস ইজিপ্টি:এই মশাটি ডেঙ্গু জ্বর, জিকা ভাইরাস এবং হলুদ জ্বরের জন্য দায়ী। এটি কালো এবং সাদা ডোরাকাটা নকশা সহ ছোট, কালো মশা।
  • এডিস অ্যালবোপিকটাস:এই মশাটিও ডেঙ্গু জ্বর, জিকা ভাইরাস এবং চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের জন্য দায়ী। এটি কালো শরীর এবং সাদা পা সহ ছোট, কালো মশা।
  • কুলেক্স পাইপিয়েন্স: এই মশাটি ফাইলেরিয়া সিসিসিসের জন্য দায়ী, যা এলিফ্যান্টাইসিসের কারণ হতে পারে। এটি একটি বড়, বাদামী মশা যার পাগুলিতে সাদা ব্যান্ড রয়েছে।
  • আনোফেলিস গ্যাম্বিয়া: এই মশাটি ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী। এটি একটি বড়, বাদামী মশা যার পাগুলিতে ছোট, সাদা দাগ রয়েছে।

আফ্রিকান মশাগুলি মানুষের জন্য একটি গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি কারণ এগুলি বিভিন্ন রোগ বহন করতে পারে। এই মশাগুলো থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য মশার প্রতিরোধক ব্যবহার করা, মশার জালের নীচে ঘুমানো এবং মশার প্রজননের স্থানগুলি মুছে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ।

আনোফিলিস মশা

অ্যানোফিলিস মশা মশার একটি প্রজাতি যা ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী পরজীবী বহন করে। তারা বিশ্বব্যাপী পাওয়া যায়, তবে এগুলি গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে বেশি প্রচলিত।

অ্যানোফিলিস মশা অন্যান্য মশার চেয়ে বেশ কিছু উপায়ে আলাদা করা যেতে পারে। তারা দীর্ঘ, পাতলা পা এবং একটি পালকযুক্ত শরীর সহ বড়। তাদের মাথায় একটি স্বতন্ত্র “স্নোউট” থাকে যা লম্বা, সরু শুঁড় ধারণ করে।

অ্যানোফিলিস মশা সাধারণত রাতের বেলায় সক্রিয় থাকে এবং জলাভূমিতে বাস করে। তারা মানুষ এবং প্রাণীর রক্ত খায় এবং রক্ত খাওয়ার সময় পরজীবী বহন করতে পারে।

অ্যানোফিলিস মশা দ্বারা ছড়িয়ে পড়া ম্যালেরিয়া একটি গুরুতর রোগ যা প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়। রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, ঠান্ডা, মাথাব্যথা এবং পেশী ব্যথা। কিছু ক্ষেত্রে, ম্যালেরিয়া মারাত্মক হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে

অ্যানোফিলিস মশা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আপনি বেশ কিছু জিনিস করতে পারেন। আপনি মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করতে পারেন, এমন পোশাক পরতে পারেন যা আপনার ত্বককে ঢেকে রাখে এবং মশার জাল ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপনার এলাকায় মশার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারেন, যেমন জলাভূমিতে স্থির জল অপসারণ করা।

অ্যানোফিলিস মশা সম্পর্কে এখানে কিছু অতিরিক্ত তথ্য রয়েছে:

  • অ্যানোফিলিস মশার 400 টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে।
  • কেবলমাত্র স্ত্রী মশা মানুষ এবং প্রাণীর রক্ত খায়।
  • অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়ার পরজীবী বহন করার জন্য 10 দিন পর্যন্ত সময় নিতে পারে।
  • ম্যালেরিয়ার কোন প্রতিকার নেই, তবে রোগটি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে।

আপনি যদি মনে করেন যে আপনি অ্যানোফিলিস মশা দ্বারা কামড়ানো হয়েছে তবে ম্যালেরিয়ার লক্ষণগুলির জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করা ম্যালেরিয়ার জটিলতা এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *